ছাতাটি যেনতেন নয়। এটিকে বলা হয় স্মার্ট ছাতা। ছাতা যে কেবল ছায়া দেয় তা নয়। ছাতায় আছে বিশেষ ধরনের পাখা। ছাতা খুললে শিশিরের মতো পানি ছড়াবে। মরু অঞ্চলে এর চেয়ে সেরা জিনিস আর হতেই পারে না!
সৌদি আরব ও মক্কা নগরীর গরম সম্পর্কে সবারই জানা। সারা পৃথিবী থেকে প্রায় ২৫ লাখ মুসলমান মক্কায় হজে সমবেত হন। এসব হাজির জন্য এবার সুখবর। হাজিদের স্বস্তি দিতে সৌদি আরবের এক বিজ্ঞানী ওই স্মার্ট ছাতার উদ্ভাবন করেন। মক্কার আবহাওয়া প্রচণ্ড তপ্ত। মক্কার বাইরে থেকে যারা যান তাঁদের ওই আবহাওয়াতে মানিয়ে নিতে হয়। কিন্তু গরম সহ্য করা বেশ কষ্টকর। এরপরও ইসলাম ও নবীর প্রতি ভালোবাসায় প্রতিবছর প্রায় ২৫ লাখ মানুষ হজের সময় হাজির হন মক্কায়। এই হাজিদের জন্যই ছাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ছাতাটির উদ্ভাবক সৌদি আরবেরই বিজ্ঞানী মোহাম্মদ বিন হামেদ আস-সায়েগ। ছাতাটি ‘কাফিয়া’ স্মার্ট ছাতা নামে পরিচিত। ছাতাটির বৈশিষ্ট্য হলো এটি ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা নিঃসরণ করতে পারে। এর ওজন মাত্র ৬৬০ গ্রাম। খুব সহজে বহন করা যায়।
ছাতাটিতে ফ্যান আছে। এ ছাড়া হাতলের নিচের একটি অংশ খুলে সেখানে একটি পানির বোতল লাগিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। এরপর ওই পানি টেনে ওপরে ফ্যানের কাছে নিয়ে গিয়ে শিশিরের বিন্দুর মতো গায়ে ছিটিয়ে দেয়। প্রচণ্ড গরমে ফ্যানের বাতাসের পাশাপাশি এ রকম শিশির বিন্দুর স্পর্শ গরম তো দূর করবেই, শরীরকে যথেষ্ট আরামও দেবে।
ছাতাটিতে আলাদা করে চার্জ দেওয়া যায়। আবার সৌরশক্তি থেকেও চার্জ নিতে পারবে। ওই ব্যবস্থাও করা আছে। এরই মধ্যে ছাতাটি বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত শুরু হয়েছে। ‘কাফিয়া ছাতা’র উদ্ভাবক মোহাম্মদ বিন হামেদ বলেন, সৌদি আরবের তাপমাত্রা বেশি হওয়াতে বিশেষ করে ইউরোপ, এশিয়ায় এবং অন্যান্য দেশের হজযাত্রীদের অধিকাংশই এই ছাতা ব্যবহার করতে পছন্দ করছেন। ছয় মাস ধরে ছাতাগুলোর চাহিদা বেড়েছে বলে জানান ওই বিজ্ঞানী।
হামেদ আরো বলেন, ‘ওই ছাতা পাম্পের মাধ্যমে পানি ছড়িয়ে দিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করতে সক্ষম। এটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন যা এই বছর হজযাত্রীদের তাপমাত্রার মধ্যে অভূতপূর্ব আরাম দেবে।’
এই ছাতা শুধু হজযাত্রীরা ব্যবহার করবেন তা নয়, সৌদি আরব এবং অন্যান্য দেশেও ব্যবহার করা যাবে। কিং আবদুল আজিজ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কেএসিএসটি) ছাতাটি উদ্ভাবনের জন্য এরই মধ্যে মোহাম্মদ বিন হামেদকে সনদ দিয়েছে। ছাতাটির পরিবেশক রাইড মাতা জানিয়েছে, হাজিদের চাহিদা মেটাতে চীনে তৈরি করা হয়েছে ‘কাফিয়া ছাতা’।